বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এম ভি আব্দুল্লাহকে ভারী অস্ত্র দিয়ে সজ্জিত করেছে সোমালি জলদস্যুরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেভাল ফোর্সের একটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর কাছাকাছি আসায় নিজেদের ‘শক্ত’ অবস্থান জানান দিতে গুলি ছুড়েছে তারা। এমভি আব্দুল্লাহতে জিম্মি নাবিক ইঞ্জিন অয়েলার মোহাম্মদ শামসুদ্দিনের পরিবারের একজন সদস্য এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই নাবিকের বরাত দিয়ে তার পরিবারের সদস্য জানান, ‘এমভি আব্দুল্লাহর অদূরে ইইউ’র যুদ্ধ জাহাজ অবস্থান নেওয়ায় জিম্মি ২৩ নাবিকের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করছে সশস্ত্র জলদস্যুরা। ৩০ থেকে ৩৫ জন সশস্ত্র জলদস্যু জাহাজে সার্বক্ষণিক পাহারায় থাকছে। কেবিনে থাকতে দেওয়া হচ্ছে না নাবিকদের। ইতোমধ্যে জাহাজে সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেজন্য পানি ব্যবহার নিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে নাবিকদের। একটি টয়লেট ব্যবহার করতে হচ্ছে সবাইকে। খাবার নিয়েও কষ্টে আছেন নাবিকরা। তবে এখনও পর্যন্ত সব নাবিক সুস্থ আছেন।’
জিম্মি এমভি আব্দুল্লাতে ভারী অস্ত্র বসানোর প্রমাণ মিলেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ। গত বুধবার দ্য ডেইলি সোমালিয়া ও ভারতীয় বিমান বাহিনীর এক্স অ্যাকাউন্ট থেকে জলদস্যুদের ভারী অস্ত্র তাক করে রাখার এই ছবি প্রকাশ করা হয়।
দ্য ডেইলি সোমালিয়ার পোস্টে বলা হয়, ১৭ নাবিকসহ জলদস্যুর কবলে পড়া মাল্টার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি রুয়েন উদ্ধার করে ভারতীয় নৌবাহিনী। এরপর থেকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করছে এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজে থাকা জলদস্যুরা। ছবিটিতে দেখা যায়, কাপড় মুড়িয়ে সমুদ্রের দিকে তাক করে রাখা হয়েছে অস্ত্রটি।
ভারত মহাসাগর থেকে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি জিম্মি করার ৯ দিনের মাথায় বুধবার দস্যুরা জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের সঙ্গে প্রথম যোগাযোগ করে। সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূলে নোঙর করে রাখা জাহাজ থেকেই যোগাযোগ করে দস্যুরা। ১২ মার্চ সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল (১ নটিক্যাল মাইল=১ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার) দূরে ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ছিনতাই করেছিল তারা। বর্তমানে জাহাজটি সোমালিয়ার গদভজিরান উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে রাখা হয়েছে।
এদিকে জিম্মি করে রাখা জাহাজটির চার থেকে পাঁচ নটিক্যাল মাইল দূরে বৃহস্পতিবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর একটি যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। যুদ্ধজাহাজটি জিম্মি জাহাজকে নজরে রাখছে। অভিযান না চালালেও যুদ্ধজাহাজের নজরদারি নাবিকদের নিরাপদে ফেরাতে দস্যুদের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে বলে ধারণা করছেন অভিজ্ঞ নাবিকেরা।