অগ্রসর রিপোর্ট: ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন ও শিক্ষার্থীদের মিছিলে টোকাই ও ছিন্নমূল শ্রেণির লোকদের ঢুকিয়ে তাদের দিয়ে রাজধানীর উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুরে সহিংসতা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। আর এই সহিংসতার মধ্যে একজন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী মারতে পারলে পাঁচ হাজার টাকা এবং একজন পুলিশ সদস্য মারতে পারলে ১০ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি-ডিএমপি) প্রধান হারুন-উর-রশিদ।
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘোষণার (সহিংসতার জন্য পুরস্কার) মদদদাতা মো. আব্দুল আজিজ ওরফে সুলতানকে (৪৫) ঢাকার উত্তরখান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ডিএমপির সাইবার অ্যাণ্ড স্পেশাল ক্রাইম উত্তর বিভাগ।‘
গ্রেপ্তারকৃত আজিজকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে হারুন বলেন, ‘লন্ডন থেকে নূরে আলম সিদ্দিকী ওরফে পিটন নির্দেশ পেয়ে তার দুলাভাই গ্রেপ্তারকৃত মো. আব্দুল আজিজ ওরফে সুলতানকে দায়িত্ব দেন। পরে একজন ছাত্রলীগ মারলে পাঁচ হাজার টাকা এবং একজন পুলিশ মারলে ১০ হাজার টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর বিএনপি ক্যাডাররা টোকাই এবং ছিন্নমূল মানুষ দিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়।’
হারুন বলেন, ‘পুলিশের প্রতি এতো ক্ষোভ কেন? স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তোলে পুলিশ। ১৯৭১ সালে পুলিশ রক্ত দিয়েছে। যখন অগণতান্ত্রিক পন্থায় দেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিনষ্ট করার জন্য বারবার চেষ্টা করে, তখন পুলিশ জীবন দিয়ে সেটা রক্ষা করে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে বারবার যে হামলা আসে তার বিরুদ্ধে কাজ করে বলে পুলিশ তাদের টার্গেট। পুলিশের মনোবল ভেঙে দেওয়ার জন্য স্বাধীনতাবিরোধীরা পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে।’
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি, নাশকতাকারীরা দেশকে পাকিস্তানি কায়দায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ সদস্যদের যারা হত্যা করেছে তাদের নাম, নম্বর পাওয়া গেছে। তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তাদের দ্রুতই গ্রেপ্তার করা হবে। তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবরের যারা বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল তাদের খুঁজে খুঁজে বিএনপির দলীয় পোস্ট (পদবী) দেওয়া হয়। তারাই এবার সরকারি স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে।’
হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘ঢাকা শহরে অরাজকতা সৃষ্টি করার জন্য যারা দায়িত্ব নিয়েছিল, তাদের মধ্যে সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইফুল আলম নীরব, এসএম জাহাঙ্গীর, রফিকুল আলম মজনু, আমিরুল ইসলামসহ অসংখ্য বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী আমাদের কাছে আছে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছি। তাদের মোবাইলে অনেক মেসেজ পেয়েছি। দেশের বাইরে থেকে তাদের অর্ডার করেছে, এসব মেসেজ আমরা পেয়েছি। মেসেজে বলা হয়েছে, আমরা নতুন কমিটি দিয়েছি, তোমরা যদি এটা না করো, তোমাদের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হবে। গত ২৮ অক্টোবর যারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে, পুলিশকে হত্যা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে আগুন দিয়েছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা চালিয়েছে তাদেরকে বেছে বেছে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে।’