অগ্রসর রিপোর্টঃ দেড় মাস পর ধরা পড়ার ১০ ঘণ্টা পর বুনো হাতিটির চেতনা ফিরে স্বাভাবিক ভাবে দাঁড়িয়েছে। এখন অপেক্ষা মাহুত দিয়ে বশে আনার। তারপরই জামালপুর থেকে হাতি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে।
অধিদফতরের উদ্ধার দলের ভেটেরিনারি সার্জন সৈয়দ হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে কামারাবাদ ইউনিয়নের কয়রা গ্রামে ট্রাংকুলাইজার বন্দুক থেকে ডার্ট ছুড়ে অচেতন করা হয় হাতিটিকে।
এরপর কয়েকশ মানুষ পাঁচ টনের বেশি ওজনের পুরুষ হাতিটিকে জলাশয় থেকে লোকালয়ে টেনে তোলে। তারপর অচেতন হাতির শুরু হয় চিকিৎসা। শুক্রবার প্রথম প্রহরে হাতিটি শিকল পায়ে স্বাভাবিকভাবে দাঁড়াতে পেরেছে।
তিনি বলেন, ‘ভারতীয় হাতিটির জীবন নিয়ে যে শঙ্কা ছিল তা আর নেই। অচেতন হওয়ার দুই থেকে তিন ঘণ্টার মধ্য সাধারণত হাতির সংজ্ঞা ফেরে; তবে এটি বেশ দুর্বল থাকায় দেরি হয়েছে। ১০ ঘণ্টা পর এখন পুরোপুরি দাঁড়াতে পেরেছে।’
রাতেই হাতিটিকে কলাগাছ ও অন্যান্য খাবার দেয়ায় শারিরীক শক্তিও ফিরতে শুরু করেছে। এদিকে সরিষাবাড়ির প্রত্যন্ত এ গ্রামে ট্রাক কিংবা ক্রেন যাওয়ার মতো অবস্থা নেই; সেক্ষেত্রে হাতিটিকে নিরাপদ জায়গা দিয়ে হাঁটিয়ে নিয়ে সরাতে হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি জানান, ‘৫/৭দিন আটকে রেখে খাবার দিয়ে, প্রশিক্ষণ দিয়ে বশ মানাতে হবে। এ গ্রাম থেকে গাড়ি চলাচলের রাস্তা প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। এখন বুনো হাতটিকে বশে আনা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। হাতির সামনের ও পেছনের তিনটি পা বড় গাছের সঙ্গে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
‘মাহুত আসার পর আরো দু’টো হাতির সঙ্গে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। একটা সময় আসবে, যখন মাহুত ডানে যেতে বললে ডানে যাবে, বাঁয়ে বললে বাঁয়ে যাবে। এরপর অন্য দুই হাতির পায়ের সঙ্গে বেঁধে হাঁটিয়ে নেয়া হবে অন্তত এক কিলোমিটার। ততদিন পর্যন্ত আটক থাকবে সে। না হলে এখান থেকে হাতি সরানো যাবে না।’
এই চিকিৎসক জানান, বশ মানানো গেলে মাহুতের সাহায্যে হাতিটিকে রাস্তার কাছাকাছি নেয়া হবে। তারপর পরিবহনে করে ঢাকার সাফারি পার্ক কিংবা শেরপুরে গজনিতে ছেড়ে দেয়া হবে।
বানের জলে ভেসে ২৬ জুন ভারতের আসাম হয়ে কুড়িগ্রাম সীমান্তে আসে বুনো হাতিটি।