আজ শনিবার সকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে বিদায় জানিয়ে তিনি শাহজালাল বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমরা যেমন চীনের সঙ্গে কাজ করছি, আবার আমরা ভারতের সঙ্গেও কাজ করছি।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, আমাদের সবার সঙ্গেই সম্পর্ক রাখতে হবে। একা আমাদের পক্ষে কোনো কিছুই সম্ভব না। ৩ দশক পরে চীনের কোনো প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফরে করলেন। শির সফরে তার ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড উদ্যোগে সমর্থন জানিয়েছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, দুই দেশের সর্বাত্মক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার জায়গায় নিয়ে যেতেও সম্মত হয়েছেন শেখ হাসিনা ও শি জিনপিং। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক বেশ নিবিড়, সেই সঙ্গে অবকাঠামোসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফ বলেন, চীন এখন সুপার পাওয়ার। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত দেখছি, তারা গঠনমূলক। এখানে চীনকে নিয়ে আতংকের কোনো কারণ নেই। বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতির দেশ হিসেবে আবির্ভূত হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলা চীন নিজেদের উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে আঞ্চলিক উন্নয়নেও সহযোগিতা করতে চায় বলে মনে করেন তিনি।
চীনের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে গিয়ে আশরাফ বলেন, আমরা চীনের সাথে গত ৫-৭ বছর ধরে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। পশ্চিমা বিশ্ব বলে, কিন্তু বাস্তবায়নে খুবই কম। কিন্তু, চীন বাস্তবায়নে খুব তৎপর। কোনো সময়েই ফাঁকি দেয় না।
চীনের প্রেসিডেন্টের সফরকে সফল দাবি করে এই মন্ত্রী বলেন, কত টাকা দিল? কত চাল দিল? কত ডাল দিল? এটা নিয়ে খোঁচাখুঁচি করতে পারেন। বিষয়টা হলো কানেকটিভিটি। চীন আমাদের সঙ্গে আছে। এটাই একটা পরিপূর্ণ বিষয়।
শি জিনপিংয়ের এই সফরে বাংলাদেশ-চীন ২৭টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, যার আওতায় বাংলাদেশ চীন থেকে ২১.৫ বিলিয়ন ডলার অর্থ-সহায়তা পেতে যাচ্ছে। এর মধ্েয ১২টি ঋণ ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি এবং দুই দেশের সরকারের মধ্েয ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক বলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান।
শি জিনপিংয়ের সফরের পর এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়েছে, সর্বাত্মক অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার জায়গায় নিয়ে যেতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে জনপ্রশাসনমন্ত্রী আশরাফ বলেন, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, শিল্প-সাহিত্য- নিরাপত্তা, সব কিছু জড়িত। শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়। চীনের সঙ্গে আমাদের অনেক কিছু আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের এই অঞ্চলের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা। এটা আমাদের অগ্রাধিকার।
দীর্ঘদিন পর কমিউনিস্ট চীনের কোনো প্রেসিডেন্টের সফর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা এক সিস্টেমে চলে, আমরা এক সিস্টেমে চলি। আমরাও তাদের সিস্টেম নিয়ে সমালোচনা করি না। তারাও আমাদের সিস্টেম নিয়ে সমালোচনা করে না।