প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্যাসের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে সকলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে প্রাকৃতিক গ্যাস অফুরন্ত নয়। তাই এ মূল্যবান সম্পদের অপচয় পরাধ করে এর যথাযথ ও সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যম জাতীয় উন্নয়নে সকলকে অবদান রাখতে হবে।
শেখ হাসিনা জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবসের প্রাক্কালে সোমবার এক বাণীতে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জনে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক পদক্ষেপকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য প্রতিবছরের ন্যায় এবারও আগামীকাল মঙ্গলবার ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস- ২০১৬’ পালন করা হচ্ছে জেনে ‘আমি আনন্দিত’।
শেখ হাসিনা বাণীতে উল্লেখ করেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট ব্রিটিশ তেল কোম্পানি ‘শেল অয়েল’র কাছ থেকে ৫টি গ্যাস ক্ষেত্র ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
তিনি বলেন, এটি ছিল জাতির পিতার দূরদর্শী সিদ্ধান্ত যা জাতীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক ও সুদূরপ্রসারি প্রভাব ফেলে। তুলনামূলক সাশ্রয়ী জ্বালানির উৎপাদক হিসেবে এই গ্যাস ক্ষেত্রগুলো রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেয়ার পর থেকে অদ্যাবধি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা রাখছে। অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত করছে।
জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সবসময়ই দেশের জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সাড়ে সাত বছরে নতুন নতুন কূপ খননসহ গ্যাস সেক্টরে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দৈনিক গ্যাস উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৭৪৪ মিলিয়ন ঘনফুট যা বর্তমানে ২ হাজার ৭৪০ মিলিয়ন ঘনফুটে উন্নীত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সুন্দলপুর, শ্রীকাইল ও রূপগঞ্জ গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ড সম্প্রসারণ এবং বিবিয়ানা-ধনুয়া গ্যাস সঞ্চালন পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে।
‘আমরা হবিগঞ্জের মুচাই এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে কম্প্রেসর স্টেশন স্থাপন করেছি’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে গ্যাস নেটওয়ার্ক বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। হাটিকুমরুল-ভেড়ামাড়া পাইপ লাইনের কাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস সরবরাহ সম্প্রসারিত হবে।
তিনি জানান, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশজ প্রাকৃতিক গ্যাস ও কয়লার ব্যবহারের পাশাপাশি এলএনজি আমদানি করে গ্যাসের ঘাটতি পূরণ, ইস্টার্ন রিফাইনারির ২য় ইউনিট স্থাপন,তেল পরিবহণ ও খালাসে সাশ্রয়ী সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং প্রকল্প বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের চূড়ান্ত চুক্তি ইতোমধ্যেই স্বাক্ষরিত হয়েছে। নিরাপদ, নিরবচ্ছিন্ন ও অপচয়রোধী জ্বালানি তেল সরবরাহের জন্য চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত জেট-১ ফুয়েল পাইপলাইন স্থাপন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন,‘আমরা ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্র বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে বিশাল সমুদ্র এলাকায় ব্যাপকভিত্তিক গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উৎপাদন কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, গ্যাস অপচয়ের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-১৬’ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
তিনি জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস ২০১৬ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।