অগ্রসর রিপোর্ট :নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আবারো হরতালের ঘোষণা দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাই পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা ও গোলাগুলির প্রতিবাদে শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টায় এই হরতাল কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি।
চরপার্বতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক তানভির হরতাল কর্মসূচির সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হরতালের কারণে বন্ধ থাকবে উপজেলামুখী সকল ধরনের যান চলাচল।
এর আগে, শুক্রবার সন্ধ্যায় নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আবদুল কাদের মির্জার সমর্থিতদের সঙ্গে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে কোম্পানীগঞ্জ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুই গ্রুপের সংঘর্ষে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া অন্তত দুই পক্ষের ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। গুলিবিদ্ধরা হচ্ছে, উপজেলার বড়রাজাপুর গ্রামের আবদুল ওয়াহিদের ছেলে সাইদুর রহমান (২৬), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের সিরাজুল ইসলামের ছেলে নুরুল অমিত (২০), বসুরহাট পৌরসভার আবুল কালামের ছেলে রায়হান (২০)। গুরুত্বর আহরা হলেন, চরফকিরা ইউনিয়নের মো. কাঞ্চন (৬০), মুছাপুর ইউনিয়নের আবুল খায়েরের ছেলে মাসুদ (২৫), চরকাঁকড়া ইউনিয়নের আবদুস সাত্তারের ছেলে কামরুল হাসান (৩০), চরফকিরা ইউনিযনের আবদুল মান্নানের ছেলে ফরহাদ (৪০), চরফকিরা ইউনিয়নের বোরহান উদ্দিন মুজাক্কির (২৮) বসুরহাট পৌরসভা এলাকার আদনান (২৪), মারুফ (২৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাদের মির্জা বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দিলে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মির্জানুর রহমান বাদল সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে মন্তব্যের প্রতিবাদে চরফকিরা ইউনিয়নের চাপরাশীরহাট বাজারে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার বিকেলে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেন কাদের মির্জা। পরে বাদলের অনুসারীরা চাপরাশীরহাট বাজারে মিছিল করতে গেলে কাদের মির্জার সমর্থকদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে কাদের মির্জা উপস্থিত হলে দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয় এবং তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
প্রসঙ্গত, এর আগে, বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জে আধাবেলা হরতাল পালনের ঘোষণা দেন কাদের মির্জা। নোয়াখালীর অপরাজনীতি বন্ধ, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি প্রত্যাহার এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলসহ দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আধাবেলা হরতাল পালনের ঘোষণা দেন কাদের মির্জা।
একই দাবিতে এর আগে মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ থানার সামনে নিজের কর্মী সমর্থকদের সাথে নিয়ে অবস্থান ধর্মঘট পালন করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা।