অগ্রসর রিপোর্ট :করোনা ভ্যাকসিন পেতে আগ্রহীদের অবশ্যই অ্যাপেসর মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হবে। স্মার্ট মোবাইল ফোনে অ্যাপস ডাউনলোড করে সহজে করা যাবে নিবন্ধন। এর জন্য নাম, মোবাইল নাম্বার, জন্মতারিখ, এনআইডি নম্বর, অন্য কোন শারীরিক জটিলতা আছে কিনা, পেশা ইত্যাদি বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। তবে সরকারের অগ্রাধিকার তালিকার নির্দেশনা অনুসারে টিকা দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, করোনা অ্যাপেসর নিবন্ধন ২৬ জানুয়ারি থেকে (সম্ভাব্য) শুরু হতে পারে। নিবন্ধনের পর টিকাগ্রহীতা ভ্যাকসিন সনদ পেতে ছয়টি ধাপ অতিক্রম করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের পর আগ্রহী ব্যক্তির এনআইডি যাচাই করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। দ্বিতীয় ধাপে ওয়েব পোর্টাল থেকে ভ্যাকসিন কার্ড গ্রহণ করা যাবে। তৃতীয় ধাপে নিবন্ধনকারীর কাছে চলে ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ ও এ সংক্রান্ত তথ্য। চতুর্থ ধাপে পাওয়া যাবে প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন। এরপর নিবন্ধনকারী পাবে দ্বিতীয় ধাপে ভ্যাকসিন গ্রহণের তারিখ। দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেয়ার পর গ্রহীতা পাবেন ভ্যাকসিন সনদ।
ভ্যাকসিনের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন প্রসঙ্গে ভ্যাকসিন বিষয়ক গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য ডা. শামসুল হক সারাক্ষণকে বলেন, ‘ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের অনলাইনে নিবন্ধন করতে হবে। তাদেরকে কার্ড দেয়া হবে। ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ ও দ্বিতীয় ডোজ কোথায় কোন কেন্দ্রে কিভাবে দেওয়া হবে, নিবন্ধনকারীকে সেই তথ্য সরবরাহ করা হবে।’
ডা. শামসুল হক বলেন, ‘ভ্যাকসিন দেয়ার পর অসুস্থতা অনুভব করলে টিকাদান কর্মীকে খবর দিন। প্রয়োজনে নিকটস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। টিকার কার্ড সংরক্ষণ করতে হবে। কোন কারণে কার্ডটি হারিয়ে গেলেও অপ্যাস থেকে ডাউনলোড করে নেয়া যাবে। টিকা গ্রহণ শেষে ওয়েবসাইট থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করা যাবে।’
করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে এই অ্যাপে তথ্য দিয়ে নিজেকে তালিকাভুক্ত করতে হবে। সেখান থেকে সরকার টিকা গ্রহীতার সম্পর্কে যেমন সব তথ্য পাবেন, তেমনি যারা টিকা নেবেন, তারাও পরবর্তী আপডেট সম্পর্কে জানতে পারবেন।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের মিজানুর রহমান সারাক্ষণকে বলেন, ‘স্মার্ট মোবাইল ফোনে অ্যাপসটিতে যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন। অ্যাপটা সবার জন্যই উন্মুক্ত থাকবে। তবে প্রান্তিক এলাকায় নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রসহ সরকারি প্রতিষ্ঠান সমূহের সহযোগিতা নিতে পারবে।’
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এবিএম খুরশীদ আলম সারাক্ষণকে বলেন, ‘অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় তিনটা গ্রুপ মিলে কাজ করছে। এখানে এটুআই, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস এবং ঢাকা ডিসি অফিসের সুরক্ষা নামের একটা গ্রুপ রয়েছে। প্রথম ধাপে যাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে তাদের তথ্য দিয়ে ডেটাবেজ তৈরি করা হবে। পরে ডেটাবেজ তৈরি হবে সারাদেশে। এনআইডি ধরে এটা করা হবে। যাদের ডেটা নেই তাদেরকে অনলাইনে নিবন্ধনের কথা বলা হবে।’
ভ্যাকসিনের জন্য অনলাইনে নিবন্ধন করতে মানুষের বিড়ম্বনায় পড়তে হবে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘অনলাইনে নিবন্ধন করতে গিয়ে মানুষ কি সমস্যায় পড়বে, আগে থেকে তো বলতে পারবো না। এমনটা হলে পরে সমস্যা ধরে সমাধান করতে হবে। আইটি বিশেষজ্ঞরা ফর্মুলা দিয়েছেন ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর সঙ্গে নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে ট্যাগ করে দিবে। এতে আশা করি সমস্যা হবে না।’
সরকার সব মানুষকে একসঙ্গে টিকা দিতে পারবে না। এ জন্য টিকা গ্রহণকারীদের অগ্রাধিকার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে জাতীয় পরিকল্পনায়। ওই তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির তত্ত্বাবধান করবে জেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা কোভিড-১৯ কমিটি। সেই নাম ধরে নিবন্ধন করবে এটুআই কর্মসূচি। নিবন্ধনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ বা পাসপোর্টের দরকার হবে। এর পাশাপাশি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচয়পত্র ব্যবহার করতে হবে।