অগ্রসর রিপোর্ট :প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। আমাদের দেশেও এর মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন কেনার জন্য আগাম বুকিং রেখেছি। যখনই বের হবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা পেয়ে যাব। মানুষকে কীভাবে সুরক্ষায় রাখব সে চিন্তা করেই কাজ করে যাচ্ছি। রোববার (২২ নভেম্বর) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনটি সেতু ও পাবনায় একটি স্বাধীনতা চত্বর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
করোনার ঢেউ বিশ্বব্যাপী মোকাবিলা করতে পারব
সরকারপ্রধান বলেন,‘করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বকে অচল করে দিয়েছে। সবাই এজন্য দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এ সময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। যাতে অর্থনৈতিক চাকা সচল থাকে সেদিকে খেয়াল রেখেছি। আওয়ামী লীগের সংগঠনগুলো মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে, যার ফলে করোনা মোকাবিলায় আমরা সক্ষম হয়েছি। আবারো দ্বিতীয় ঢেউ বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে। তাই আমাদের সচেতন থাকতে হবে। প্রথমে না বুঝতে পারলেও এখন প্রস্তুত আছি। চিকিৎসা সেবায়ও প্রস্তুত রয়েছি। তাই এবারও করোনা মোকাবিলা করতে পারব আমরা।’
ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলে কাজ করে যেতে পারছি
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে সরকারে আছি বলে মানুষের উন্নয়নে কাজ করে যেতে পারছি। গ্রাম পর্যায়ে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ব্যবস্থা করেছি। সড়কব্যবস্থার প্রসার এবং নতুন সড়ক ও সেতু নির্মাণ করেছি। আওয়ামী লীগ হঠাৎ করে কিছু করেনি। যখন বিরোধী দলে ছিল তখন থেকে এসব পরিকল্পনা করেছে। আর বঙ্গবন্ধু এসব পরিকল্পনার চিন্তাভাবনা আরো আগেই করে গিয়েছিলেন। তার দেওয়া সংবিধানে সব কিছুই উল্লেখ করা আছে। সে সংবিধান অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’
দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সব জায়গার যোগাযোগ সহজ হবে
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মধুমতি নদীর সেতু নির্মাণের ফলে মাগুরা জেলার ব্যাপক উন্নয়ন হবে। অর্থনৈতিক দিক থেকেও এ জেলার মানুষ এখন অনেকটা এগিয়ে যাবে। জীবনমানেও উন্নয়ন ঘটবে।’ রুপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক সময় নারায়ণগঞ্জের রুপগঞ্জে লঞ্চে করে যেতে হয়েছিল। সেতুটি রুপগঞ্জের দুটি অংশকে সংযোগ করবে। এছাড়া সিলেট ও চট্টগ্রাম অভিমুখী সড়ক সহজ হয়ে যাবে। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে সব জায়গার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হবে।’
অভয়নগরে সেতু নির্মাণের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের ফলে যশোরে অভয়নগর উপজেলার সঙ্গে দূরত্ব কমে যাবে। নগরবাসীর জন্য সুবিধাও হবে। সেতুটি ওই উপজেলার মানুষের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ঠ অবদান রাখবে। নদী বন্দরগুলো আরো প্রশস্ত হবে। কৃষি থেকে শুরু করে যেকোনো পণ্য বাজারজাত করা সহজ হয়ে যাবে। এতে মানুষের জীবনমানও অনেক সহজ হবে। দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের ভালো যোগাযোগ হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পাবনায় ঐতিহাসিক ব্যক্তি রয়েছেন। বঙ্গবন্ধুও এ জেলায় অনেকবার গিয়েছেন। রফিকুল ইসলাম বকুল রাজনীতিতে ছাত্রজীবন থেকে খুবই সক্রিয় ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর আমি যখন বাংলাদেশে আসলাম তখন বারবার বাধাগ্রস্ত হতাম। পাবনায় যে সময় গিয়েছি তখন প্রতিটি ক্ষেত্রে আমাকে সহযোগিতা করেছেন। স্বাধীনতা অর্জনে মুক্তিযুদ্ধের সময় যেমন তার অবদান রয়েছে, তেমনি আমার দেশে আসার পর নানা ক্ষেত্রে তার অবদান রয়েছে। তিনি পাবনায় প্রথম স্বাধীন পতাকা তোলেন। এছাড়া বকুল মুজিব বাহিনীর সদস্যও ছিলেন।’
তিন সেতু উদ্বোধন
এর আগে প্রধানমন্ত্রী মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার মধুমতি নদীর ওপর এলাংখালী ঘাটে ৬০০ দশমিক ৭০ মিটার দীর্ঘ ‘শেখ হাসিনা সেতু’, নারায়ণগঞ্জ জেলার রুপগঞ্জ উপজেলাধীন মুড়াপাড়া ফেরিঘাট রাস্তায় শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর ১০ হাজার মিটার চেইনেজে ৫ লাখ ৭৬ হাজার ২১৪ মিটার দীর্ঘ ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) সেতু, যশোরের অভয়নগর উপজেলায় সড়ক ও জনপথের যশোর-খুলনা সড়কের ভাঙ্গাগেট (বাদামতলা) থেকে আমতলা জিসি ভায়া মরিচা, নাউলী বাজার সড়কে ভৈরব নদীর ওপর ৭০ হাজার ২৫৫ মিটার সেতু এবং পাবনায় ‘মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বকুল স্বাধীনতা চত্বর’ এর উদ্বোধন করেন।