অগ্রসর রিপোর্ট : বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপিত হয়েছে।১৯৭১ সালের এই দিনে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দি উদ্যান) তার বজ্র নিনাদ কন্ঠে এক কালোত্তীর্ণ ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করেন। এই ভাষণের মধ্য দিয়ে তৎকালীন সাড়ে ৭ কোটি মুক্তিকামী বাঙালির আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটে।
জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে ইতিমধ্যেই বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন জাতীয় পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সকালে বঙ্গবন্ধু ভবনসহ দেশব্যাপী দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসটির কর্মসূচি শুরু হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে স্বাধীনতার এই মহান স্থপতির প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানান।
শেখ হাসিনা প্রথমে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তিনি স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি হিসেবে দলের পক্ষ থেকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে আরেকটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এসময় আওয়ামী লীগের সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদী ফুলে ফুলে ভরিয়ে দেন।
আওয়ামী যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।
এছাড়াও বিকাল তিনটায় বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সন্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন ।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সকালে আগারগাঁও প্রধান কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। এতে মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরায় স্ব স্ব অবস্থান থেকে কাজ করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র মিলনায়তনে ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের গুরুত্ব ও তাৎপর্য’- শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ, প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা পরিচালনা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান।
এছাড়াও ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ দিবস উপলক্ষে সকালে রোকেয়া হলের ৭মার্চ ভবন চত্বরে স্থাপিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
বঙ্গবন্ধু একাডেমি ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ছিলো ২৪ বছরের পাকিস্তানি অত্যাচারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস এবং পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির সামগ্রিক নির্দেশনা। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে আসন্ন যুদ্ধের সব প্রস্তুতির উল্লে¬খ ছিলো এই ভাষণে ।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ উপলক্ষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ এর নেতৃত্বে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ড. হাফিজ মুহম্মদ হাসান বাবু, ড. মো. মশিউর রহমান, ট্রেজারার মো. নোমান উর রশীদসহ বিভাগীয় প্রধানরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন।
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে, যথাযোগ্য মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে সেখানেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়।