স্টাফ রিপোর্টার: রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। বাংলাদেশ এই ঐতিহ্য রক্ষায় কোনো ছাড় দেবে না।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশে সকল ধর্মের লোক স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করে। এখানে প্রতিটি ধর্মীয় উৎসব সার্বজনীনভাবে পালিত হয়। আমরা এই ঐতিহ্য রক্ষায় কখনোই কাউকে ছাড় দিতে পারি না। তিনি আজ ডেইলি স্টার পত্রিকার ২৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রদানকালে এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি হামিদ সন্ত্রাসবাদকে একটি সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ এখন আর কোনো দেশের একক ভূখন্ডের সীমানার মধ্যে সীমিত নেই। এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা।
বিশ্বায়নের এই যুগে প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধ মোকাবেলায় বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদসহ সকল আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংঘবদ্ধ অপরাধ ও স্থানীয় পর্যায়ের সকল অপরাধ উদঘাটন ও প্রতিরোধে গণমাধ্যমকেও সর্বশেষ প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবে। ধর্মকে ব্যবহার করে কেউ যাতে অশুভ কিছু করতে পারে, সে ব্যাপারেও গণমাধ্যমকে ভূমিকা রাখতে হবে।
রাষ্ট্রপতি সমাজের সংবাদপত্রের ভূমিকা সম্পর্কে বলেন, জনসাধারণকে সঠিক তথ্য দেয়ার মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সংবাদপত্রের ভূমিকা সহায়ক হতে পারে। তিনি বলেন, বিভিন্ন জাতীয় ইস্যু সম্পর্কে জনমত সৃষ্টিতে তাদের ভূমিকা রয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, আমি আশা করি, সকল গণমাধ্যম বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করে দেশের গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই উন্নয়নের ধারাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলার সৎ সাহসই পারে একজন সাংবাদিককে পেশাগত উৎকর্ষের শীর্ষে নিয়ে যেতে। আপনারা সরকারের, এমনকি আমার নিজেরও সমালোচনা করুন। তবে সেই সমালোচনা যেনো হয় তথ্যভিত্তিক। কোনভাবেই যেনো একপেশে না হয়।
তিনি বলেন, সংবাদপত্রের ওপর যে কোনো হামলা, গণতন্ত্রের ওপর মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। আমরা চাই, সংবাদপত্র দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করবে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, সংবাদপত্র দেশের একটি দর্পণ। কারণ, সংবাদপত্র জাতির বিবেকের প্রতিফলন ঘটায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সংবাদপত্রের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন পাকিস্তানি শাসনের বিরুদ্ধে সংবাদপত্র একটি সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিল। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বাংলাদেশের পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছিলো।
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইমেরিটাস ড. আনিসুজ্জামান, মিডিয়া ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের চেয়ারপার্সন রোকিয়া আফজাল রহমান, ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক কুলদ্বীপ নায়ার, ন্যাশনাল মাল্টিমিডিয়া গ্রুপের সম্পাদকীয় ও ব্যবস্থাপনা বোর্ডের প্রধান উপদেষ্টা সুথিচাই সায়ে ইউন, কস্তুরি এন্ড সন্স লিমিটেড চেয়ারম্যান এবং ভারতের হিন্দু প্রকাশনা গ্রুপের প্রকাশক এন রাম এবং ডেইলি স্টারের সম্পাদক ও প্রকাশক মাহফুজ আনাম বক্তব্য রাখেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।