অগ্রসর রিপোর্ট :রাজধানীতে মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। পাশাপাশি মেট্রোরেলের যাত্রীবাহী কোচের নির্মাণ কাজও সমাপ্তের পথে। গত সেপ্টেম্বরে দুই সেট কোচ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি মাসে আরো তিন সেট কোচ নির্মাণ সম্পন্ন হবে।
ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন সিদ্দিক শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সেপ্টেম্বর মাসে জাপানের ওসাকার কারখানায় মেট্রো ট্রেনের দুই সেট কোচের নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। আরো তিনটি সেট তৈরির কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ডিসেম্বর নাগাদ তা নির্মাণ সম্পন্ন হবে’।
তিনি বলেন, ‘মেট্রো রেলটি ৪০ মিনিটেরও কম সময়ে ২০ কিলোমিটারের পুরো রুট ভ্রমণ করতে পারবে। এ রুটে ৬০ হাজার যাত্রী ঘন্টায় যাতায়াত করতে পারবে। প্রতিটি ট্রেনের ছয়টি কোচের মধ্যে একটি কোচ নারীদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। তবে ট্রেনের অন্যান্য কোচে নারী-পুরুষ একসাথে ভ্রমণ করতে পারবে।’
উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেললাইনের প্রথম পর্যায়ের কাজের অগ্রগতি ৭৭.৫৭ শতাংশ এবং আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রেললাইনটির ৪৭.৪৯ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সামগ্রিকভাবে রেলপথটির ৫৩.৫৮ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর জন্য ২০.১ কিলোমিটার দীর্ঘ মেট্রো রেল সিস্টেমের একটি অংশ উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রায় ১১.০৪ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে।
৯টি স্টেশনের সাব-স্ট্রাকচার সম্পন্ন হয়ে গেছে। উত্তরা উত্তর, উত্তরা মধ্য ও উত্তরা দক্ষিণের স্টেশনের হলঘরের ছাদ নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া ও শেওড়াপাড়া স্টেশনের হলঘরের নির্মাণ কাজ চলছে। উত্তরা মধ্য ও উত্তরা দক্ষিণ-এর প্লাটফরম নির্মাণের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে আর উত্তরা উত্তরের প্লাটফরম নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। স্টেশন তিনটির কারিগরি ও বৈদ্যুতিক কাজ শুরু হয়েছে।
পাশাপাশি, কন্ট্রাক্ট প্যাকেজ সিপি-৭ হস্তান্তরের জন্য টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ সাবস্টেশন, সিগন্যালিং ও স্ট্রেশন কন্ট্রোলারের অফিস নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে।
সিদ্দিক আশা করছেন, করোনা পরিস্থিতিতে সুরক্ষা নীতি মেনে এখন যেভাবে কাজ চলছে তা অব্যাহত থাকলে, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই রেলপথটি সম্পন্ন হবে।
এমআরটি লেন-৬ নির্মাণকাজে নিয়োজিত কয়েকজন কর্মীর মধ্যে কোভিড-১৯ এর উপসর্গ দেখা দেয়ায় তাদের কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে। তাদের কোভিড-১৯ সনাক্তকরণ পরীক্ষা করা হয়েছে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গাবতলি নির্মাণাধীন স্থানে ১০ শয্যার একটি আইসোল্যাশন কেন্দ্র ও উত্তরা পঞ্চবটি নির্মাণস্থানে ১৪ শয্যার একটি আইসোল্যাশন কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে উল্লেখ করে সিদ্দিক বলেন, প্রয়োজনে আরো আবাসিক স্থাপনা নির্মাণ করা হবে। যাদের দেহে কোভিড-১৯ ধরা পড়েছে তাদেরকে বাড়িতে অথবা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনে তাদেরকে করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালে ভর্তি করা হবে।
ম্যাস র্যাটিড ট্রানজিট-এমআরটি লেন-৬-এর ২১ কিমি দীর্ঘ রুটে মোট ১৬টি স্টেশন থাকবে। স্টেশনগুলো হলো- উত্তরা উত্তর, উত্তরা মধ্য, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণী, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। দিয়াইবাড়ি, মিরপুর ও মতিঝিল স্টেশনগুলো আইকনিক হবে। অন্যান্য স্টেশনগুলো স্বাভাবিকভাবেই নির্মাণ করা হবে।
সিদ্দিক বলেন, ‘যদি সবকিছু স্বাভাবিক থাকে, তবে নির্ধারিত সময়ের আগেই রাজধানীবাসীরা তাদের স্বপ্নের মেট্রোরেলে চড়ে দিয়াইবাড়ি থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন।’