রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের দুই শিশুসহ নিহত পাঁচ যাত্রীর প্রত্যেকের পরিবারকে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১৭ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকারিয়া খানের পক্ষে আইনজীবী এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম এ রিট দায়ের করেন।
গত পাঁচ বছরে ফ্লাইওভার নির্মাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিআরটির উন্নয়ন প্রকল্পে জননিরাপত্তায় কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তলবেরও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে।
স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহত হন। ওই গাড়িতে থাকা নবদম্পতি গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।
নিহতরা হলেন- আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল (৫৫), ফাহিমা আক্তার (৩৮), ঝরণা আক্তার (২৭), জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪)। আহত নবদম্পতি হলেন হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১)। দুজনেই উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার রাতেই নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝরণা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় এ মামলা করেন। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ২২ সেপ্টেম্বর দিন ধার্য রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরপরই সোমবার রাতে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে কমিটিকে একদিনের মধ্যে প্রাথমিক ও দুদিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
‘এখানে ন্যূনতম নিরাপত্তা নেই’ উল্লেখ বিআরটি প্রকল্পের কাজ আপাতত বন্ধ থাকবে বলে মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হন। এরপরও জননিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাওয়ায় সোমবার আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটে।