স্টাফ রিপোর্টার: রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ শিক্ষা কর্মসূচি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেছেন, দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চাহিদা ও কাজ ভিত্তিক শিক্ষা দরকার।
রাষ্ট্রপতি আজ রাজধানীর বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালন্স (বিইউপি)-এ ভাষণ দেয়ার সময় বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে আমাদের শিক্ষা পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া, আমাদের শিক্ষার্থীদের পেশাভিত্তিক প্রচলিত ও অপ্রচলিত শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে যাতে তারা নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বিশ্বায়নের এই যুগে টিকে থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যই নয় বরং এটি জ্ঞান অর্জন এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগানোর একমাত্র পথ।
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, কেবলমাত্র সার্টিফিকেট অর্জনের জন্যই আমাদের শিক্ষার প্রয়োজন নেই। বরং জাতিকে এগিয়ে নিতে আমাদের আলোকিত মানুষ ও সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব গড়ার শিক্ষা প্রয়োজন।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশে আইসিটি জ্ঞানসম্পন্ন মানবসম্পদ প্রয়োজন। প্রাতিষ্ঠানিক ও অবকাঠামোগত সমস্যা সত্ত্বেও দেশ ৬ শতাংশের অধিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখতে সক্ষম হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এ দেশ ইতোমধ্যে নিন্ম-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে এবং শিগগিরই এটি মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য বাংলাদেশের বিপুল জনশক্তি, রফতানিবান্ধব বন্দর সুবিধা, সৃজনশীলতা, বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার ও অনুকূল ভৌগোলিক অবস্থানের মতো বহু উপাদান রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সম্ভাবনাগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হলে একুশ শতক ‘এশিয়ার শতক’ হওয়ায় উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ অগ্রগামী যাত্রীর আসন বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
রাষ্ট্রপতি ও বিইউপি’র চ্যান্সেলর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ¯œাতকদের অভিনন্দন জানান এবং দেশের পাশাপাশি দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার জন্য তাদের প্রতি আহবান জানান। তিনি বলেন, ‘তোমরা এখন দেশের উচ্চতর মানবসম্পদ। আজকের সমাবর্তন একদিকে তোমাদের অর্জনের স্বীকৃিত দিচ্ছে এবং অন্যদিকে তোমাদের ওপর দায়িত্ব ন্যস্ত করছে এবং এই দায়িত্ব তোমাদের পরিবার, সমাজ এবং সর্বোপরি দেশ ও জাতির ওপর।’
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালন্স (বিইউপি)-এর নাম পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে বলেন, কারণ, এখানে কেবল পেশাজীবীরাই নয় সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এখানে পড়াশোনা করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘অনেক সাধারণ শিক্ষার্থী এখানে লেখাপড়া করে। সুতরাং আমি মনে করি, এর নাম পরিবর্তন হওয়া দরকার। এর নাম হওয়া দরকার ইউনিভার্সিটি অব এক্সিলেন্স, বাংলাদেশ। সেনাপ্রধানসহ সংশ্লিষ্টরা একটি অধিকতর ভালো নাম বেছে নিতে পারেন।
সশস্ত্র বাহিনী পরিচালিত বিইউপি ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি দেশের ৩০তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এ কে এম মোজাম্মেল হক ও বিইউপি’র ভিসি মেজর জেনারেল শেখ মামুন খালেদও অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
সমাবর্তন বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মান্নান।
এবার ৮৩৫ শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি দেয়া হয়। তাছাড়া অসামান্য অবদানের জন্য ১৪ জন স্বর্ণপদক লাভ করেছেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।