অগ্রসর রিপোর্ট :স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নবম দিনে এসে মুখরিত হতে শুরু করেছে অমর একুশে বইমেলা। ছুটির দিন হওয়ায় দর্শনার্থীর পাশাপাশি বই বিক্রিও বেশি হয়েছে। তবে সকালের দিকে প্রায় দর্শনার্থীশূন্য থাকলেও বিকেলের দিকে মানুষ এসেছেন, সন্ধ্যার পর পর ক্রমেই জমে উঠছে মেলা প্রাঙ্গণ।
স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শুক্রবার (২৬ মার্চ) অমর একুশে গ্রন্থ বইমেলার দ্বার উন্মোচিত হয় বেলা ১১টায়। সকাল ও দুপুরের দিকে প্রায় দর্শনার্থীশূন্য ছিল বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মেলা প্রাঙ্গণ। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বইপ্রেমিদের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিকাল তিনটার পর থেকেই সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আসছেন দর্শনার্থী।
দর্শনার্থী ও বই বিক্রি বেশি হওয়ায় খুশি অন্বেষা প্রকাশনীর বিক্রয়কর্মী উত্তম বিশ্বাস। তিনি বলছেলেন, বইমেলায় আজ অনেক পাঠক এসেছেন। তবে সকাল বা দুপুরে তেমন ছিলেন না। এবারের বইমেলার নয় দিনের মধ্যে আজই এতো লোক হয়েছে, গত আট দিন মিলেও যা হয়নি।
অন্য কয়েকজন বই বিক্রেতা সারাক্ষণকে বলেন, স্বাভাবিকভাবে মেলা শুরুর পর থেকে দিন দিন মানুষ বাড়তে থাকে। এবারো বাড়ছে। দর্শনার্থী বাড়লে বিক্রিও বাড়ে। আজ শুক্রবার, সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং স্বাধীনতা দিবস। বইপ্রেমিদের সঙ্গে দর্শনার্থীরা বেশি এসেছে। রাজধানীতে গণপরিবহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করলে ও পরিস্থিতি ভালো থাকলে দর্শনার্থীর ভিড় আরো বেশি হতো।
অন্যদিনের মতোই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতাও লক্ষ্য করা গেছে। মাস্ক পরেই স্টল থেকে স্টল ঘুরে ক্রেতারা কিনছেন পছন্দের লেখকদের বই। অবশ্য মেলায় প্রবেশে মাস্ক অবধারিত, মাস্ক ছাড়া কাউকে মেলায় প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
এদিকে দ্বিতীয় ধাপে প্রায় শেষ হয়েছে লিটলম্যাগ চত্বর নির্মাণের কাজ। শেষ সময়ের কাজ চললেও বসেছে তরুণ লেখকদের আড্ডা। বরাবরই অমর একুশে বইমেলায় তরুণ লেখকদের আড্ডায় মুখর হয়ে থাকে লিটলম্যাগ চত্বর। দেশের অনেক বড় সাহিত্যিকও এই চত্বরে এসে আড্ডায় মেতে ওঠেন।
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে বইমেলা চললেও করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর হচ্ছে ১৮ মার্চ থেকে, চলবে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। প্রতিদিন বিকেল তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত আর ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত চলছে মেলা।
বরাবরের মতো এবারও বইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় ১৫ লাখ বর্গফুট জায়গায়। একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে ৮৩৪টি স্টল ও ৩৩টি প্যাভিলিয়ন। গত বছরের মতো এবারও লিটল ম্যাগাজিন চত্বর স্থানান্তরিত হয়েছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মূল মেলা প্রাঙ্গণে। সেখানে ১৩৫টি লিটলম্যাগকে পাঁচটি উন্মুক্ত স্টলসহ ১৪০টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।