অগ্রসর প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ শিল্প উদ্যোক্তাদেরকে সহজ শর্তে ঋণ দেয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ঋণ গ্রহীতাদেরকেও সময়মতো ঋণ পরিশোধ করা উচিত।
রাষ্ট্রপতি আজ এখানে রাষ্ট্রপতির শিল্প উন্নয়ন পুরস্কার-২০১৪ বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানকে উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানে এগিয়ে আসতে হবে এবং ঋণ গ্রহীতাদেরও সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
বেসরকারি খাতে শিল্প স্থাপন, উৎপাদন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য ১২টি শিল্পকে এই পুরস্কার দেয়া হয়। রাষ্ট্রপতি তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ দেশের এবং জনগণের কল্যাণে ব্লু-ইকোনমি ব্যবহারে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের দৃষ্টি আকর্ষণে সরকারের সঙ্গে কাজ করতে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশে এখন মৎস্য, তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সমৃদ্ধ বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক সম্পদে সমৃদ্ধ এলাকা রয়েছে, যা থেকে বিদেশী বিনিয়োগের একটি চমৎকার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে একটি কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যাতে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে বলে আমি মনে করি।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্পায়নের প্রত্যাশিত লক্ষ্য অর্জনে বেসরকারি খাতের বিকাশ প্রয়োজন। এতে দেশের শিল্পায়ন গতিশীল হবে। বেসরকারি খাত ও শক্তিশালী হবে। এ কারণে সরকার বেসরকারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে।
এ জন্য তারা যাতে সহজ শর্তে ঋণ পায়, সেটি নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্রপতি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি দেশের শিল্প খাতের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সরকার গৃহীত পদক্ষেপের কারণে শিল্প খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অর্থনীতির অগ্রগতিতে এ খাতের অবদান রয়েছে।
২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরিত করতে সরকার জিডিপিতে শিল্প খাতের অবদান ৩৫ শতাংশে উন্নীত করতে এবং কর্মসংস্থান ২৫ শতাংশ করতে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার এই লক্ষ্য অর্জনে শিল্প নীতি-২০১৬ প্রণয়ন করেছে।
রাষ্ট্রপতি উদ্যোক্তাদের প্রতি শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, শিল্প উৎপাদন বজায় রাখতে শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অতএব উৎপাদন ও শ্রমশক্তি একে অপরের পরিপূরক।
তিনি একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) গড়ে তুলতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে বলেন, এসইজেড কেবল স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগকারীদেরই আকৃষ্ট করবে না। এসব অঞ্চল এক কোটি লোকের চাকরি এবং বার্ষিক ৪০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের রফতানিরও সুযোগ সৃষ্টি করবে।
এই পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু। অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা হোসেন ভুইয়া ও ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাখাওয়াত হোসেনও বক্তৃতা করেন।
বড় শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করে চট্টগ্রামের বিএসআরএম স্টিল লিমিটেড ও কুষ্টিয়ার বিআরবি ক্যাবেল ইন্ডাস্ট্রিজ। মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন, এগ্রিকেয়ার ইমপোর্টস এন্ড এক্সপোর্টস ও জালালাবাদ ফ্রোজেন ফুড লিমিটেড। আর ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় নরসিংদীর হেলাল এন্ড ব্রাদার্স এবং পাবনার এডিসন গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রি ও প্রিন্স কেমিক্যাল কোম্পানি।
কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পায় মানিকগঞ্জের জননী উইভিং ফ্যাক্টরি। সর্বোপরি হাইটেক শিল্প ক্যাটাগরিতে পুরস্কার লাভ করে চট্টগ্রামের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ও ঢাকার সার্ভিস ইঞ্জিন লিমিটেড।

প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।