অগ্রসর রিপোর্টঃ রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪১তম শাহাদৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী পৃথক দুটি ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদনের পর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে এই মহান নেতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
বাংলাদেশ সশ¯্রবাহিনীর একটি চৌকস দল বাঙালিজাতির স্থপতিকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় বিউগলের করুন সুর বাজানো হয়।
পরে ১৫ আগস্ট শহীদ বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
একদল বিপথপামী সৈনিক ১৯৭৫ সালের এ দিনে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা বেগম মুজিব, তাঁর তিন ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল, মুক্তিযোদ্ধা শেখ জামাল, ১০ বছরের ছোট্ট রাসেল, দুই ভাইয়ের নবপরিণীতা স্ত্রী সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি কৃষক নেতা আব্দুর রব সেরনিয়াবত, যুবনেতা শেখ ফজলুল হক মনি এবং তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মনি, বেবী সেরনিয়াবত, সুকান্ত বাবু, আরিফ, রিন্টুসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের ১৮জন সদস্য হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব কর্নেল জামিলকেও হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় স্বামীর কর্মস্থল জার্মানীতে অবস্থান করায় বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে শেখ হাসিনা এবং ছোট মেয়ে শেখ রেহানা প্রাণে রক্ষা পান।
এদিন জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় বঙ্গবন্ধু নাতনী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কন্যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নেত্রী সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাতীয় সংসদের উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, তিনবাহিনী প্রধানগণ এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন এবং ১৪ দলীয় শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামীগ সভাপতি হিসেবে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে একটি শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন।
এরপর প্রধানমন্ত্রী পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের বর্বরোচিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার স্থান, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটিতে যান (বর্তমান বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর) এবং সেখানে কিছু সময় অতিবাহিত করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন প্রধান বিচারপ্রতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পক্ষে পুষ্পাঞ্জলী অর্পণ করেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে তথ্যমন্ত্রী এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, সাম্যবাদী দল সভাপতি এবং সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়–য়াসহ ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ এ সময় জাতির পিতার প্রতিকৃতি শ্রদ্ধাঞ্জলী জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান। সেখানে শায়িত ১৫ আগস্টের শহীদ বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা, শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেলসহ সেদিনের শহীদদের কবরেও তিনি শ্রদ্ধাঞ্জলীর ফুলের রিং অর্পণ করে ফুলের পাঁপড়ি ছড়িয়ে দেন।
তিনি এ সময় শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ করেন এবং বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
শেখ রেহানা, সায়মা হোসেন পুতুল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ,ঢাকা উত্তর ও দক্ষিল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনিসুুল হক এবং সাঈদ খোকন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং ফাতেহা পাঠের রাষ্ট্রীয় কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণের জন্য গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া যাত্রা করেন।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।