অগ্রসর রিপোর্ট :ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের ভারতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ‘এর মাধ্যমে উভয় দেশ লাভবান হতে পারে। ভারতের কাছ থেকে শিখতে পারবেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। আবার বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও শেখার অনেক কিছু আছে। বাংলাদেশ ভারতের সম্পর্ক এতোটাই সুদৃঢ় যে কোনো কিছুই একে নস্যাৎ করতে পারবে না। আমরা ঐতিহ্যের অংশীদার। আমরা উন্নয়নের অংশীদার। আমরা লক্ষ্যও ভাগাভাগি করি।’
শুক্রবার (২৬ মার্চ) জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিশেষ অতিথির ভাষণে মোদি এ কথা বলেন।
মোদি বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও জাতি গঠনে তার অবদানের ভূয়সী প্রসংসা করেছেন। বাংলাদেশের জনগণকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন অর্জন করায় আন্তরিক অভিনন্দন জানান।
বঙ্গবন্ধুর কথা স্মরণ করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি বলেছিলেন- বাংলাদেশকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারবে না। বাংলাদেশের উন্নতি তার কন্যার নেতৃত্বে কেউ থামিয়ে রাখতে পারেনি।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমার রাজনৈতিক পদচারণাতেও গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম। আমি ও আমার রাজনৈতিক সহকর্মীরা ভারতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার দাবিতে সত্যাগ্রহ আন্দোলনে যোগ দেই। আমার বয়স তখন ২০ এর শুরুর দিকে। এদেশের স্বাধীনতার জন্য সত্যাগ্রহ আন্দোলন করায় আমাকে ভারতে জেলে যেতেও হয়েছিল, যাকে আমি নিজের জন্য সৌভাগ্য বলে মনে করি।’
মোদি বলেন, এদেশের স্বাধীনতার জন্যে যেসব বীর মুক্তিযোদ্ধা জীবন দিয়েছিলেন, এবং যেসব ভারতীয় সৈনিক বাংলাদেশের পক্ষে লড়েছিলেন, তাদের অবদান চির স্মরণীয়। তাদের সাহস ও আত্মত্যাগ আমরা কখনোই ভুলব না।’
ভাষণের সময় নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক মজবুত করতে তরুণদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর তাগিদ দেন। এ সময় মোদি ভাষা শহীদ সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারকে স্মরণ করেন। অনুষ্ঠানে গোবিন্দ হালদারের লেখা গান ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, আমরা তোমাদের ভুলব না’ গানটিও বাংলায় উচ্চারণ করেন।
এছাড়াও ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চ এর ভাষণের খণ্ডাংশও স্মরণ করেন। তিনি জোরালো কণ্ঠে বলেন-‘এবারের সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’।
১০ দিন ব্যাপী স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বন্ধবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর শেষদিনের অনুষ্ঠানমালার আজ ২৬ মার্চ, শেষদিন। সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীসহ বাংলাদেশ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা।
এ অনুষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, দেশের বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল, অনলাইন মিডিয়া এবং স্যোশ্যাল মিডিয়ায় সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।