প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যারা জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড লিপ্ত হচ্ছে তাদের বেশিরভাগই উচ্চবিত্তের সন্তান। উচ্চবিত্তের সন্তানদের জীবনে কোনো অভাব নেই। তাদের সব চাহিদাই পুরণ হচ্ছে। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। এখন বেহেস্তের হুর পেতে তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। এজন্য হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। এটা বিস্ময়কর।
রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ সব কথা বলেন।
জঙ্গি বা সন্ত্রাসী হামলা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা এসব কাজ করছে তারা কেন করছে জানি না। এটা সঠিক পথ নয়। মানুষ খুন করলে বেহেশতের দরজা খোলে না।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আগে মনে করা হতো মাদ্রাসার ছেলেরাই এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটায়। তবে সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় দেখা যাচ্ছে, অনেক ভালো, শিক্ষিত-ধনী পরিবারের ছেলেরাও এসবে জড়িয়ে পড়ছে। তাদের তো সবই পাচ্ছে, তাদের জন্য কোনো কিছুই অপূরণীয় থাকে না, তারপরও তারা কেন এসবে জড়াচ্ছে? এর যৌক্তিকতা কী? কারা তাদের পেছন থেকে উসকাচ্ছে?’
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা আমরা নিয়েছি। বিদেশ সফরে থাকলেও আমি এ বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি আমি কয়েকটি চিঠির কথা শুনেছি, যাতে কয়েকটি মার্কেটে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা নেওয়া হয়েছে। সরকারে পক্ষ থেকে যা যা করার তা আমরা করছি। তারপরও আমি বলবো দেশের মানুষকে এ বিষয়ে আরো সচেতন হতে হবে।
তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সব সময় অসাংবিধানিক ভাবে ক্ষমতা দখলের বিরুদ্ধে। তুরস্কের জনগণ সেনা অভ্যুত্থান মোকাবেলা করে প্রমাণ করে দিয়েছে জনগণই ক্ষমতার উৎস।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন আসেম সম্মেলনে তখনই ফ্রান্সে হামলার ঘটনার খবর আসে। আমি তখনও নিন্দা জানিয়েছি, এখনও নিন্দা জানাচ্ছি। এরপরই তুরস্কের সেনা অভ্যূত্থানের খবর আসে।
তিনি বলেন, আসেম সম্মেলনে আমি আমার বক্তব্যে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের কথা তুলে ধরি। পাশাপাশি জঙ্গিবাদের মদদদাতা, অর্থদাতা, অস্ত্রদাতাদের খুঁজে বের করতে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আসেম সম্মেলনে যোগ দেয়ার পাশাপাশি আমি বাংলাদেশের গুলশানে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে জাপানের প্রধানমন্ত্রী, ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতিকে সরকারের চলমান তদন্ত সম্পর্কে জানাই।