স্টাফ রিপোর্টার: মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের অকৃতিম বন্ধু, ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইর্স্টাণ কমান্ডের চিফ অব স্টাফ লে. জেনারেল (অব.) জেএফআর জ্যাকব আর নেই।
পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর পরাজয়ের এই সাক্ষী দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর আজ বুধবার সকালে দিল্লীর একটি সামরিক হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯২ বছর। বাংলাদেশের নয় মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তান হানাদার বাহিনীর ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণের অন্যতম প্রধান ভূমিকা রাখেন জ্যাকব। তিনি নিজ হাতে পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের দলিলের খসড়া তৈরী করেন। তাঁর প্রণীত যুদ্ধ কৌশলের ফলে স্বল্পতম সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ বাহিনীর কাছে ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় ।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জেনারেল জ্যাকবের এই ঐতিহাসিক ভূমিকার জন্য বাংলাদেশ সরকার এর পক্ষ থেকে তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
জে এফআর জ্যাকব পাঞ্জাবের সাবেক গভর্ণর ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ‘সারেন্ডার অ্যাট ঢাকা’ নামের একটি বই লিখেন তিনি। তিনি ১৯ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ কয়েকটি বড় যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
ভারতের গণমাধ্যমে জ্যাকব সর্ম্পকে বলা হয়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন এবং তারপরেও বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গের মানুষের মধ্যে জ্যাকব প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন।
এদিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালনকারী জে এফ আর জ্যাকবের মৃত্যুতে গভীর শোক এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্য়টনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এমপি, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, সেক্টর কমান্ডার্রস ফোরাম- মুক্তিযুদ্ধ ’৭১ এর চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) কে এম সফিউল্লাহ, বীরউত্তম ও মহাসচিব হারুন হাবিব।
পৃথক বিবৃতিতে তারা প্রয়াতের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং তাঁর শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
তারা বলেন, তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন সুহৃদকে হারালো। বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু জেনারেল জ্যাকবের অবদান জাতি চিরকাল শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।