কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি : ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত ফেলানীর পরিবারকে পাঁচ লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ দিতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে দেশটির জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের অর্থ প্রদানের এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি সোমবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন ফেলানী হত্যা মামলার আইনজীবী ও কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্রাহাম লিংকন।
তিনি বলেন, ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ায় ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বপ্রণোদিত হয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এ টাকা পরিশোধ করার নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, এর মধ্য দিয়ে অপরাধীর দায় স্বীকার করা হল। ফলে আসামি অমিয় ঘোষের নতুন করে বিচারের দ্বার উন্মোচিত হল।
ফেলানীর বাবা নুর ইসলাম বলেন, ‘শুধু ক্ষতিপূরণ নয়, ভারতের সুপ্রীম কোর্টে ফেলানী হত্যা মামলার ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হোক সেটা চাই। আমার মেয়েকে আমার চোখের সামনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি সেই বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের ফাঁসি চাই।’
প্রসঙ্গত, ৮ জুলাই বাংলাদেশ আইন ও সালিশ কেন্দ্রের মাধ্যমে ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চের (মাসুম) নির্বাহী পরিচালক কিরীট রায়ের কাছে ভারতের উচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করেন ফেলানীর বাবা নূর ইসলাম। মামলাটি আমলে নিয়ে ৬ অক্টোবর মামলার রিটের শুনানির দিন ধার্য করেছেন ভারতের সুপ্রীম কোর্ট।
২০১১ সালে ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হন বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী।
ওই ঘটনার পর বিএসএফের বিশেষ আদালত অমিয় ঘোষকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ গঠন করে। দুই বছর আট মাস পর ২০১৩ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ প্রদান করে রায় দেন বিএসএফের বিশেষ আদালত।
ওই রায় যথার্থ মনে করেননি বিএসএফের মহাপরিচালক। তিনি রায় পুনর্বিবেচনার আদেশ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় দফায় ২০১৫ সালের ২ জুলাই বিএসএফের বিশেষ আদালত পুনরায় অভিযুক্ত অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দেন।