অনলাইন ডেস্ক- উত্তম কুমার বড়ুয়া মূলতঃ একজন কবি, যাঁর জন্ম ৪ মে, ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত বোয়ালখালী থানার শাকপুরা গ্রামে। ব্যক্তিজীবন- কবির পিতার নাম বিভুতি ভুষণ বড়ুয়া এবং মাতার নাম পারিকা মুৎসুদ্দী। কুমিল্লা, চান্দিনা, মতলব, চাঁদপুর, রাঙ্গামাটি এবং চট্টগ্রামে তাঁর শৈশব এবং কৈশোর অতিবাহিত হয়। এইসব জায়গায় তিনি বিদ্যালয়ের পাঠ চুকান। চাঁদপুর জেলার আক্কাস আলী রেলওয়ে একাডেমী (হাই স্কুল) থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা পাশ করেন। রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার কাপ্তাইতে অবস্হিত সুইডেন বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজী হতে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর উপর ডিপ্লোমা লাভ করেন। অতঃপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর হতে সমাজ বিজ্ঞানে ব্যাচেলর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি বর্তমানে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বি.আর.টি.এ.) তে সহকারী পরিচালক (ইঞ্জি.) হিসেবে কর্মরত। চাকুরীর সুবাদে তিনি বগুড়া, ঢাকা, রাঙ্গমাটি, খাগড়াছড়ি, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবাা, কুড়িগ্রাম, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুড়া, রাজবাড়ি, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মাদারিপুর, শরিয়তপুর ইত্যাদি জেলায় গিয়েছেন। সেই কারণে জীবনের নানা অভিজ্ঞতার সাথে তাঁর পরিচয় ঘটে। তাঁর সহধর্মিনীর নাম ম্রা সাং চিং। তাঁদের সানি বড়ুযা ও সনি বড়ুয়া নামে দুটি কন্যা এবং এপোলো বড়ুয়া নামে একটি পুত্র সন্তান আছে।
তার রচনাবলী- ১৯৭৪ সালের ১২ মার্চ কবির কাব্য রচনার হাতেখড়ি ঘটে। জীবনের ব্যস্ততার জন্য ১৯৮৬ সাল থেকে প্রায় বার বছর তিনি কোন কাব্য রচনা করেন নাই। ১৯৯৮ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারী থেকে তাঁর লেখনী পুনরায় সচল হয়। ইতোমধ্যে তিনি ৮৫০টির বেশী কবিতা এবং ১০০টি ছড়া রচনা করেছেন। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বর হতে ছোটগল্প রচনায় উদ্যোগী হন এবং ২০০৭ সালের আগস্ট হতে উপন্যাস রচনায় হাত দেন। তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থের নাম পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব চাই, যা ১৯৯৮ সালের জুলাই মাসে ছাপা হয়। এরপর আরও তিনটি মূল্যবান কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে এগুলো হলোঃ গল্পের সেই ছেলে আজ, (২০০৪), আমি আছি তুমি আছ, (২০০৪) এবং শেষ ট্রেন চলে গেছে (২০০৬)।
অন্যান্য কার্যক্রম- তিনি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। এ সকল কার্যক্রমের মধ্যে বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষাদান কর্মসূচী, দুস্হদের মাঝে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও বৃক্ষ রোপন বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তিনি উত্তরবঙ্গ বৌদ্ধ পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন। তাছাড়া, তিনি জেতবন বৌদ্ধ বিহার, চাঁনপুর, রংপুর; মহাবন বৌদ্ধ বিহার, রংপুর; সিতবন বৌদ্ধ বিহার, রংপুর এর পরিচালনা পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বেণুবন বৌদ্ধ বিহার, মিঠাপুকুর রংপুর এর পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন। তিনি আনন্দ বৌদ্ধ বিহার, ছাতনি পাড়া, হরিারমপুর, দিনাজপুরের উদ্দেক্তা হিসেবে বিহারের নামকরণ সহ ভিত্তি দান করেন। তিনি রাঙ্গমাটি আরচ্যারী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশন, ঢাকার কার্যকরী পরিষদের সদস্য। তিনি ওয়াল্ড পোয়েট সোসাইটি, ল্যারিস্সা, গ্রিস এবং বাংলা একাডেমী, ঢাকার সদস্য। মানবতাবাদ ও পরিবেশ রক্ষায় অবদানের জন্য জাতীয় সাংবাদিক সংস্হার পক্ষ থেকে তাঁকে জাসাস স্বাধীনতা পদক-২০০১, প্রদান করা হয়। অরণ্য বনানীরা এবং এখন এখানে কবিতা দুটি ইন্টারন্যাশনাল লাইব্রেরী অব পোয়েট্রি, যুক্তরাস্ট্র আয়োজিত কবিতা প্রতিযোগিতায় সেমিফাইনালিস্ট হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে এবং কবিতা দুটি তাঁদের এনথ্রোলজিতে ছাপানো হয়। এখন এখানে কবিতাটি তাঁদের দ্যা সাউন্ড অব পোয়েট্রি শিরোনামের সিডি ও ক্যাসেটে প্রকাশিত হয়েছে। সাঁতার কাটা, বই পড়া, বৃক্ষ রোপন, ফটোগ্রাফী এবং ভ্রমণ তাঁর অন্যতম সখ।