ষ্টাফ রিপোর্টার- ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় (নিলয় নীল) হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রাজধানী থেকে সাদ আল নাহিয়ান ও মাসুদ রানা নামে দু’জনকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ । বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় নাহিয়ানকে উত্তরার সাত নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির মাঠ থেকে এবং মাসুদকে মিরপুরের কালশীর একটি স্থান থেকে আটক করা হয়।
আটক দু’জন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য বলে জানতে পেরেছে ডিবি পুলিশ। নিলয় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহেই ঐ দু’জনকে আটক করা হয়। আইনশৃংখলা বাহিনী ব্লগার নিলয় হত্যাকাণ্ডে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সন্দেহভাজন কয়েকজন সদস্যকে নজরদারির আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে। আর এ হত্যাকাণ্ড এবিটির সংশ্লিষ্টরাই করেছে বলে অনেকটাই নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত সংস্থাগুলো। নিলয় হত্যাকাণ্ডের পর সন্দেহভাজন হিসেবে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পাশাপাশি তার দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে অভিযানও চলছে । তবে প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা নিলয় হত্যায় জড়িত কিনা তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা।
আইনশৃংখলা বাহিনীর একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমকে জানায়, আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের খুনিদের একজন হলেন সাদ আল নাহিন। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এই নাহিন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর ভাতিজা বলে জানা যায়। সাদ আল নাহিন এর আগেও ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন হত্যা প্রচেষ্টার সঙ্গে জড়িত ছিল। তাকে ওই সময় গ্রেফতারও করা হয়েছিল। পরে আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিতে সাদ আল নাহিন এবিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকার আদ্যোপান্ত সব তথ্য দেয়। এদিকে, আটক এই সাদ আল নাহিন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর ভাতিজা কিনা তা জানার জন্য তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু তিনি অসুস্থ বলে ফোন রিসিভ করেনি। পরে তার পিএস আমিরুল ইসলাম খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নজরুল হক নান্নু প্রতিমন্ত্রীর ছোট ভাই বলে জানেন তিনি। সে হিসেবে নাহিন তার ভাতিজা বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তিনি বলেন, প্রতিমন্ত্রী অসুস্থ তাই বিশ্রামে আছেন। এ জন্য হয়তো ফোন রিসিভ করছেন না। তদন্ত সংস্থার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সাদ আল নাহিন আসারুল্লাহ বাংলা টিমে যোগদানের পর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে থাকে।
সে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে হত্যা চেষ্টায় জড়িত ছিল। পরে আদালতে জবানবন্দি দেয়। এ মামলায় সে জামিনের পর আবার পুরনো বৃত্তে জড়িয়ে ‘তথাকথিত জিহাদি চেতনায়’ উদ্বুদ্ধ হয়। সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শুক্রবার রাজধানীর পূর্ব গোড়ানের ৮ নম্বর রোডের ১৬৭ নম্বর বাসায় ব্লগার নিলয় খুনে যে চারজন খুনিরা বর্ণনা তারা পেয়েছেন, তাদের মধ্যে সন্দেহভাজন বাঁ-হাতি আবদুল করিম ওরফে জাবেরের বিষয়ে কিছু তথ্য পাওয়া যায়। এমনকি এবিটির খুনি দলে যারা আছে তার মধ্যে নাহিনও অন্যতম।