অগ্রসর রিপোর্ট :রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার ও চীন। আগামী ১৯ জানুয়ারি ঢাকায় ওই বৈঠক হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বুধবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, আশা করি সচিব পর্যায়ের এই ত্রিপক্ষীয় বৈঠকটি অত্যন্ত ফলপ্রসূ হবে বলে। এর আগে গত বছরের ২০ জানুয়ারি ত্রিপক্ষীয় বৈঠক হয়েছিল বলে তিনি জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মিয়ানমারকে এ পর্যন্ত আট লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গার তালিকা পাঠানো হয়েছে। তবে মিয়ানমার খুব ধীরগতিতে এগোচ্ছে। এ পর্যন্ত ৪২ হাজার রোহিঙ্গার পরিচয় মিয়ানমার যাচাই-বাছাই করেছে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবনে মিয়ানমার সিরিয়াস নয়। যাচাই-বাছাই করা রোহিঙ্গাদের মধ্যে ২৮ হাজার জন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অধিবাসী ছিল বলে স্বীকার করেছে দেশটি। বাকি ১৪ হাজারের কোনো তথ্য তাদের ভাণ্ডারে নেই বলে জানিয়েছে মিয়ানমার কতৃপক্ষ।
ড. এ কে আবদুল মোমেন আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজটা গুরুত্বের সঙ্গে করছি। কিন্তু মিয়ানমার সমভাবে কাজ করছে না।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘মিয়ানমারের ব্যবহারে পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। তিনি জানান, ১ জানুয়ারি মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দফতরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়েকে চিঠি লিখে এ বছর প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করার অনুরোধ করা হয়েছে।’
মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দফতরের মন্ত্রী টিন্ট সোয়েকে পাঠানো চিঠিতে কী লেখা হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করিয়ে দিয়েছি তাদের প্রতিশ্রুতির কথা। তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে নিরাপত্তা দিয়ে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবে। রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবে কিন্তু কোনও অগ্রগতি হয়নি।’ সমস্যার সমাধান একমাত্র মিয়ানমারই করতে পারে এবং তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের ব্যবহারে পরিবর্তন হচ্ছে। আমরা আশাবাদী। দ্বিপাক্ষিক, ত্রিপাক্ষিক ও বহুপক্ষীয় আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। এমনকি আইনি কাঠামোর মধ্যেও কাজ করছি। যত ব্যবস্থা আছে সব নিয়ে কাজ করছি।’
২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে জাতিগত নিধনযজ্ঞ, গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মুখে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। ওই বছরের ২৩ নভেম্বর রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে প্রত্যাবাসন চুক্তি সই হয়। মিয়ানমার পরিচয় নিশ্চিত করেছে এমন রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে এ পর্যন্ত দুই দফা উদ্যোগ ভেস্তে গেছে। কারণ একজন রোহিঙ্গাও বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে ফিরতে রাজি হয়নি।